মাগুরার মহম্মদপুরে ৮ বছরের হিন্দু শিশু ধর্ষনের শিকার হওয়া পরিবারের পাশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পক্ষে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন
ফারুক আহমেদ, মাগুরা প্রতিনিধিঃ
গতকাল মাগুরার শিশু ধর্ষনের বিষয়টি টেলিভিশন সহ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে পড়ে। তিনি তাৎক্ষণিক ভাবেই শিশুটির পরিবারের সাথে কথা বলতে চান এবং তার নির্দেশে ঢাকা থেকে প্রতিনিধি পাঠান। আজ শনিবার ১৯ জুলাই মাগুরা সদর হাসপাতালে তারেক জিয়ার পক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন শিশুটির পরিবার ও তার শারীরিক ব্যাপারে ডাক্তারদের সাথে কথা বলেন এবং তার উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকা নেওয়ার বন্দোবস্ত করেন। গরীব শিশুটির মা ও দাদু রবিউল ইসলাম নয়নের মাধ্যমে তারেক রহমানের নিকট ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মাগুরার শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় বাস্তবায়ন হওয়ার পূর্বেই আবারও ৮ বছর বয়সী হিন্দু শিশু বাচ্চাকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার অভিযুক্ত সৈয়দ আলী নামে (৬৫) এক ব্যক্তিকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গত সোমবার ১৪ জুলাই বিকালে মহম্মদপুর উপজেলা সদরের আমিনুর রহমান ডিগ্রী কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে বাজার রাধানাগর গ্রামে এই লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে।
শিশুটির দাদু শিবু বিশ্বাস (৭৫) জানান, গত সোমবার বিকালে তার নাতনি প্রতিবেশী সৈয়দ আলীর বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিল। কারণ সিনথিয়া নামে সৈয়দ আলীর ছেলের একটি মেয়ে আছে এবং ঐ বাচ্চাটির সাথে খেলা করতেই ভিকটিম শিশুটি পাশেনর বাড়িতে যায়।
এই সুযোগে সৈয়দ আলী শিশুটিকে একা পেয়ে ঘরের ভেতরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন নিপীড়ন করে। কিন্তু শিশুটি তাৎক্ষণিক ভাবে পরিবার বা অন্য কারও সাথে লজ্জা বা ভয়তে বলেনি। মূলতঃ বাচ্চাটির মা তাকে রেখে অন্যত্র সংসার করছে এবং তার বাবা সম্রাট বিশ্বাস কাজের জন্য বাহিরে থাকে বিধায় শিশুটির অভিভাবক বলতে তার দাদু শিবু বিশ্বাস। কিন্ত রাতে শিশুটি খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলে শিশুটি ব্যাথাতে কাতরাতে থাকে। তখন তার দাদু বলে ঘুমোস না কেন তখন শিশুটি তার দাদুকে গোপনাঙ্গে অতিরিক্ত ব্যথার কথা জানায় এবং ওখানে ব্যাথার কারণ জানতে চাইলে শিশুটি বলে প্রতিবেশী সিনথিয়ার দাদু বিকালে আমার সাথে খারাপ কাজ করেছে।
বিষয়টি জানার পর তার দাদু স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামকে তার নাতীর সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের কথা বললে তাৎক্ষণিক মেম্বার তার নিজ মোটরসাইকেলে করে দাদু ও নাতিকে রাত দশটার দিকে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।
মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী মো. আবু আহসান জানান, শিশুটির গোপনাঙ্গ অতিরিক্ত ফোলা রয়েছে। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঐ রাতে এ্যাম্বুলেন্স যোগে মাগুরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং মাগুরা সদর হাসপাতাল শিশুটির ধর্ষনের যাবতীয় টেস্ট শেষে ধর্ষন চেষ্টার সত্যতা নিশ্চিত করে এবং শিশুটিকে চিকিৎসা করার জন্য ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাকে ঘিরে মহম্মদপুরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের সব নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের জনগণ।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রজব আলী বলেন, ঐ রাতেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মাগুরা ২ আসনের বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ঢাকা দক্ষিন যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নের সহযোগিতায় আমরা হাসপাতালে যায় এবং সংখ্যালঘু শিবু বিশ্বাসকে অভয় প্রদান করে তার নাতীর চিকিৎসা ও মামলার আইনানুগ সব রকম সহায়তায় আশ্বাস দিই। ঐ রাতেই পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করে ও পরদিন মামলা পরবর্তী আদালতে প্রেরণ করে। কিন্তু আমরা দ্রুত ও সঠিক বিচারের দাবীতে বিএনপি সহ অঙ্গ সংগঠন ও এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে মহম্মদপুরে প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচার নিশ্চিতে মিছিল করি।
এ বিষয়ে শিশু আছিয়া ধর্ষনের সর্বপ্রথম প্রতিবাদী রবিউল ইসলাম নয়ন জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মাগুরা সহ সারাদেশে যেকোনো ধর্ষনের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান। ধর্ষনের বিষয়ে নিজ জেলা মাগুরা বাদেও সারাদেশের মানুষদের সচেতন হওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন অসহায় মেয়েটির চিকিৎসা সহ তার সাথে হয়ে যাওয়া অন্যায়ের বিচারের জন্য প্রয়োজনে তিনি সকলকে নিয়ে রাজপথে নেমে এই ধর্ষকের দ্রুত বিচারকার্য সম্পাদন করবেন।
মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহমান নিশ্চিত করেছেন, শিশুটি বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছে এবং অভিযুক্ত সৈয়দ আলীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে একটি মামলা করা হয়েছে।