জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ১৫ জুলাই ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার উপজেলা পরিষদ মাঠ, যে মাটি তিতাসের তীরে শতাব্দীর গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী, সেখানে গতকাল সকাল সাড়ে দশটায় আদিবাসী মহিলা উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে মাসব্যাপী শিল্প ও পণ্য মেলার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এক অপরূপ উৎসবের সুর বেজে উঠেছে, যেন বাংলার প্রাণে সৃজনশীলতা, সম্প্রীতি, আর স্বপ্নের এক অমর কাব্য রচিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি. এম. রাশেদুল ইসলামের হাতে ফিতা কেটে শুরু হওয়া এই মেলা শুধু বাণিজ্যের মিলনস্থল নয়, বরং দেশীয় শিল্পের গৌরব, আদিবাসী সংস্কৃতির প্রাণস্পন্দন, এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের স্বপ্নের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি, যা আখাউড়ার মাটিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরছে। সংস্থার সভানেত্রী রাখী মনি সিনহার সভাপতিত্বে এই মহোৎসবে উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ছমিউদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন আব্দু, সাধারণ সম্পাদক ডা. খোরশেদ আলম ভূঁইয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. বাহার মিয়া, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. বোরহান উদ্দিন খান, এবং যুবদলের আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন, যাঁদের সম্মিলিত উপস্থিতি এই মেলাকে সামাজিক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল প্রতীকে রূপান্তরিত করেছে।
রাখী মনি সিনহা তাঁর হৃদয়ছোঁয়া বক্তৃতায় বলেন, “এই মেলা কেবল পণ্য প্রদর্শনীর মঞ্চ নয়, এটি আমাদের শিল্পের গৌরব, আমাদের সংস্কৃতির প্রাণ, এবং আমাদের তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্নের সেতু, যা আখাউড়ার অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্ভাবনাকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরবে।” তিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন, যেন এই মেলা একটি নিরাপদ ও আনন্দময় উৎসবে পরিণত হয়।
এই মেলায় আখাউড়ার বিখ্যাত তাঁত শিল্প, হস্তশিল্প, কৃষিপণ্য, এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের নানাবিধ সৃষ্টি প্রদর্শিত হচ্ছে, যা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অর্থনৈতিক প্রাণশক্তির প্রতীক হিসেবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে, যেন তিতাস গ্যাস ফিল্ড ও আশুগঞ্জ সার কারখানার পাশাপাশি আখাউড়ার নিজস্ব পরিচয় বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এই মেলা কেবল বাণিজ্যের উৎসব নয়, এটি আখাউড়ার মানুষের স্বপ্ন, সংগ্রাম, আর একতার এক জীবন্ত কাহিনী, যা প্রতিটি স্টলে, প্রতিটি হাসিতে, এবং প্রতিটি হৃদয়ে প্রতিফলিত হচ্ছে। প্রতিটি পণ্যের পেছনে লুকিয়ে আছে একটি গল্প, প্রতিটি সৃষ্টিতে মিশে আছে একটি স্বপ্ন, এবং প্রতিটি পদক্ষেপে ধ্বনিত হচ্ছে সম্প্রীতির অমর সুর।
এই মাসব্যাপী আয়োজন আখাউড়ার মাটিকে সম্প্রীতির আলোয় আলোকিত করুক, এবং বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তরে সৃজনশীলতা ও একতার বার্তা ছড়িয়ে দিক, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই মেলা একটি অমর কাব্য হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে।