বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ মানুষ দুপুরে ভাত খেয়ে থাকেন। কিন্তু ভাত খাওয়ার পরপরই অনেকেই প্রচুর পানি পান করেন। কারও কাছে এটি স্বস্তির মনে হলেও, চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা বলছেন—অতিরিক্ত পানি পানের অভ্যাস শরীরের জন্য সবসময় উপকারী নয়। বরং এটি হজম প্রক্রিয়ায় বাধা তৈরি করতে পারে।
ভাত মূলত কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার। ভাত পাকস্থলীতে পৌঁছানোর পর গ্যাস্ট্রিক রস খাবার ভাঙতে কাজ শুরু করে। এরপর ধীরে ধীরে গ্লুকোজ তৈরি হয়ে রক্তে মিশে যায় এবং শরীর শক্তি পায়। এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে চলতে কিছুটা সময় নেয়।
চিকিৎসকদের মতে, খাওয়ার পরপর প্রচুর পানি খেলে পাকস্থলীর হজম রস পাতলা হয়ে যায়। ফলে খাবার ভাঙতে দেরি হয় এবং পেটে ভারী লাগা, অম্বল বা বদহজম হতে পারে।
ভাত থেকে উৎপন্ন গ্লুকোজ দ্রুত রক্তে না গিয়ে ধীরে ধীরে মিশে যায়। এর ফলে দুপুরে খাবারের পর অতিরিক্ত পানি পান করলে শরীরে ভারী ভাব ও ঘুম আসতে পারে।
অতিরিক্ত পানি খাবারের সাথে পাকস্থলীতে মিশে গ্যাস তৈরির প্রবণতা বাড়ায়। এতে পেট ফাঁপা, ঢেঁকুর এবং বুকজ্বালা হতে পারে।
খাওয়ার পর বেশি পানি পান করলে শরীরের মেটাবলিজম বা ক্যালরি পোড়ার হার কিছুটা কমে যায়। দীর্ঘমেয়াদে এটি ওজন বাড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—
ঢাকা ও কলকাতার বেশ কয়েকজন পুষ্টিবিদ বলেছেন, খাওয়ার পর সামান্য পানি ক্ষতিকর নয়। তবে অতিরিক্ত পানি পাকস্থলীর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। গ্যাস্ট্রিক, হজম সমস্যা ও ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি কমাতে খাবারের পর পর্যাপ্ত সময় অপেক্ষা করে পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
দুপুরে ভাত খাওয়ার পর পানি পান করা যাবে, তবে সেটা পরিমিত হতে হবে। শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো খাওয়ার আগে ও খাবারের কিছুক্ষণ পর পর্যাপ্ত পানি খাওয়া। এতে হজম স্বাভাবিক থাকবে, শরীর সুস্থ থাকবে।
আরও পড়ুন: রোগ প্রতিরোধে কার্যকর কমলা: প্রতিদিন একটি কমলা আপনার স্বাস্থ্যের সঙ্গী