ক্রিকেট বিশ্বে বয়স শুধুই একটি সংখ্যা—এই কথার জলজ্যান্ত প্রমাণ দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর এখন ব্যস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। এবার মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) মাতালেন দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে। যুক্তরাষ্ট্রের এই লিগে টেক্সাস সুপার কিংসের হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন এক ইতিহাস গড়েছেন এই প্রোটিয়া তারকা।
সম্প্রতি সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নসের বিপক্ষে খেলতে নেমে ৫১ বলে ১০০ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন ৪১ বছর বয়সী ফাফ ডু প্লেসি। ৬টি চার ও ৭টি বিশাল ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসটি তাকে পৌঁছে দিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়। তিনি এখন টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ বয়সে সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটার।
১. পল কলিংউড (ইংল্যান্ড)
সেঞ্চুরি করেছিলেন ৪১ বছর ৬৫ দিন বয়সে (২০১৭ সালে)।
২. গ্রায়েম হিক (ইংল্যান্ড)
সেঞ্চুরি করেছিলেন ৪১ বছর ৩৭ দিন বয়সে (২০০7 সালে)।
৩. ফাফ ডু প্লেসি (দক্ষিণ আফ্রিকা)
সেঞ্চুরি করলেন ৪১ বছর ৩৪২ দিন বয়সে (২০২৫ সালে)।
তালিকায় থাকা অন্য দুইজনই ইংলিশ ক্রিকেটার, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এই প্রথম একজন ব্যাটার এই অভিজাত তালিকায় নাম লেখালেন।
টেক্সাস সুপার কিংস প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে, যার অর্ধেকের বেশি এসেছে ফাফের ব্যাট থেকে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দল তার দুর্দান্ত ইনিংসের সুফল তুলতে পারেনি। সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নস ২৩ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। এমন হার কিছুটা হতাশাজনক হলেও, ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ফাফ ডু প্লেসির এই সেঞ্চুরি।
আইপিএল থেকে শুরু করে সিপিএল, বিগ ব্যাশ, পিএসএল—বিশ্বের সব বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন ফাফ। ২০২৩ আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে ৭৩০ রান করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন তিনি।
এখনও ফিটনেস এবং ফর্ম ধরে রেখে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ভয়ংকর ওপেনার হিসেবে খেলছেন। তার ব্যাটিং স্টাইল, অভিজ্ঞতা এবং ফিটনেস অনেক তরুণ ক্রিকেটারের জন্য অনুপ্রেরণা।
যুক্তরাষ্ট্রের এই মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালে এর পথচলা শুরু। ইতোমধ্যে বিশ্বের তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক টি-টোয়েন্টি লিগ হিসেবে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছে। ফাফ ডু প্লেসি ছাড়াও আন্দ্রে রাসেল, নিকোলাস পুরান, কাইরন পোলার্ড, ইমাদ ওয়াসিমের মতো বড় বড় তারকারা খেলছেন এখানে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাফ ডু প্লেসির এই সেঞ্চুরি শুধু তার ক্যারিয়ারের ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং চল্লিশের কোঠায় এসেও কীভাবে একজন খেলোয়াড় শীর্ষ পর্যায়ে খেলে যেতে পারে তার আদর্শ উদাহরণ।
বিশ্বব্যাপী টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বয়স নয়, পারফরম্যান্সই বড় কথা—এটি আরও একবার প্রমাণ করলেন ফাফ ডু প্লেসি।
লেখা: কালিকা প্রসাদ টিভি স্পোর্টস ডেস্ক
তথ্যসূত্র: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ক্রিকবাজ, এমএলসি অফিসিয়াল সাইট