আরিফ আহম্মেদ, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার বনপাড়া আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইমদাদুল হকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলীনূর খানের স্বাক্ষর জাল করে ৫ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারীর এমপিওভুক্তির আবেদন করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষামহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ইউএনও আলীনূর খান নিজেই তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে জাল স্বাক্ষর সংবলিত আবেদনপত্র প্রকাশ করে লিখেছেন, “প্রতারণার এক অভিনব কৌশল! নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে বোর্ডে কাগজপত্র দিয়ে সুবিধা নেওয়া হচ্ছে। এত অনৈতিক কাজ করলে তারা শিক্ষার্থীদের কী শিক্ষা দেবে? সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ রইল। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৩০ জানুয়ারি তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিচালক বরাবর একটি এমপিও আবেদনপত্র পাঠানো হয়, যাতে ইউএনও’র স্বাক্ষর স্ক্যান করে সংযুক্ত করা হয়েছিল। ওই আবেদনে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
এমপিওভুক্তির জন্য যাদের নাম দেওয়া হয়েছিল, তারা হলেন:
অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ মো. ইমদাদুল হক বলেন, “ইউএনও স্যারই স্বাক্ষর করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই।” তবে ইউএনও তা সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, “আমি ঐ প্রতিষ্ঠানের কাউকেই চিনি না। অধ্যক্ষ আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে কাগজে বসিয়ে আবেদন করেছেন। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে এবং অধ্যক্ষকে অফিসে ডাকার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।”
এদিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আরও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, কলেজটিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে নিয়োগের নামে তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছেন।
বর্তমানে কলেজে অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) হালুয়াঘাট উপজেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আবু রায়হান বলেন, “অধ্যক্ষ ইমদাদুল হক আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে স্বজনদের আখড়া বানিয়েছেন। তিনি সাবেক এমপি জুয়েল আরেং ও মাহমুদুল হক সায়েমের ঘনিষ্ঠ। কলেজটিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করে নিয়োগের নামে কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন।”
স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত তদন্ত ও যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।