আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণে গোপন বাঙ্কারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে। তার সঙ্গে অবস্থান করছেন ইরানের রাজনীতিতে ক্রমেই প্রভাবশালী হয়ে ওঠা ছেলে মোজতবা খামেনি ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।
বিশ্বস্ত একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাভিজান এলাকায় অবস্থিত একটি অতি-গোপন বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে দেশের রেভল্যুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি) কে যুদ্ধকালীন পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করেছেন খামেনি।
সম্ভাব্য আগাম প্রস্তুতি:
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ‘প্রি-এম্পটিভ অথরিটি ট্রান্সফার’-এর একটি অংশ। খামেনির জীবনের ওপর হামলা হলে কিংবা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে যেন নেতৃত্ব সংকট দেখা না দেয়, সে লক্ষ্যেই আগাম এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে বিষয়টিকে আরও ঘনীভূত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য।
সম্প্রতি Truth Social-এ এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘আমরা জানি তথাকথিত “সুপ্রিম লিডার” কোথায় লুকিয়ে আছেন। এখনই তাকে হত্যা করা হবে না, কিন্তু আমাদের ধৈর্য শেষের পথে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই না বেসামরিক জনগণ বা মার্কিন সেনাদের ওপর কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হোক। তবে ইরানের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।’
ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষে উত্তেজনা চরমে:
ইসরায়েল ও ইরান একে অপরের ওপর পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ইরানের একাধিক পরমাণু স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা এবং সামরিক ঘাঁটি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। জবাবে ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে শক্তিশালী পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।
ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি:
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘ইসরায়েল যদি আগ্রাসন চালিয়ে যায়, তাহলে ইরানের জবাব হবে আগের চেয়ে আরও কঠিন। শান্তি চাই, কিন্তু শান্তির পথ একটাই—জায়নবাদী আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।’
ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত:
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বের গোপন বাঙ্কারে আশ্রয়, রেভল্যুশনারি গার্ডসের পূর্ণ ক্ষমতা প্রাপ্তি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্য হুমকির মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন এবং ভয়াবহ যুদ্ধের ইঙ্গিত মিলছে। আগামী কয়েকদিনে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে, তা এখন গোটা বিশ্বের নজরে।