সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সিরাজগঞ্জ সদরের ছোনগাছা ও খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের বহু গ্রাম। এর প্রেক্ষিতে শনিবার (২৯ জুন) সকালে ছোনগাছা ইউনিয়নের ভাটপিয়ারী গ্রামে নদীপাড়ে শত শত এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন। তারা দীর্ঘদিনের ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
“নদীভাঙন ঠেকাও, ছোনগাছা ইউনিয়ন বাঁচাও”—এই স্লোগানে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অংশ নেয় ভাটপিয়ারী, পাঁচঠাকুরি, পারপাঁচিল, সিমলা, ব্রাহ্মণবয়ড়া, পাঁচিল, দৌলতপুরসহ আট গ্রামের নারী-পুরুষ ও বিভিন্ন পেশার মানুষ। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, বিলীন হয়ে যাবে বসতভিটা।
মানববন্ধনে ছোনগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমির হোসেন বলেন,
> “নব্বইয়ের দশকে নদী ভাঙন রোধে কয়েকটি বাঁধ নির্মাণ হয়েছিল, কিন্তু সেগুলো যমুনার গর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে দুই হাজার মিটারেরও বেশি জায়গা নদীতে বিলীন হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে ঘরবাড়ি ও চাষের জমি।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু জিওব্যাগ ফেললেই হবে না। নদীশাসনের জন্য এখানে স্থায়ীভাবে ক্রসবারসহ টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।”
মানববন্ধনে স্থানীয় একজন সমাজসেবক শেখ মো. এনামুল হক বলেন,
> “পানি উন্নয়ন বোর্ড দাবি পূরণের জন্য কিছু জিওব্যাগ ফেলেছে বটে, কিন্তু তা যথাসময়ে এবং সঠিক স্থানে না করায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।”
তিনি জানান, শুষ্ক মৌসুমে কার্যকর ব্যবস্থা নিলে বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়ানো যেত।
এই কর্মসূচিতে অংশ নেন মাওলানা মোখলেছুর রহমান মুকুল, মটিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাদশা আলম, নাসিম রেজা, শামীম রেজা, হোসাইন আহম্মেদ সোহাগ, শহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
তাদের সবার একটাই দাবি—যমুনার ভয়াবহ ভাঙন ঠেকাতে অবিলম্বে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
এদিকে, আজ রবিবারও যমুনা নদীর পানি বাড়তে দেখা গেছে। ফলে এলাকাবাসীর দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। অনেকেই জানাচ্ছেন, ভাঙন রোধে যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এই বর্ষা মৌসুমেই কয়েকটি গ্রাম সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
সিরাজগঞ্জের ছোনগাছা ও খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের মানুষ বারবার নদীভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। বারবার আবেদন-নিবেদন করেও স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা না হওয়ায় তারা এখন মানববন্ধনের মতো কর্মসূচিতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা দাবি জানিয়েছেন—দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় নদীশাসন নিশ্চিত করে জীবন-জীবিকা রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।