ফারুক আহমেদ, মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরা শহরের পশু হাসপাতাল পাড়ার ছায়াবীথি সড়কে ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন ভজন কুমার গুহ (৫৫) নামের এক কলা ব্যবসায়ী। শনিবার (২৬ জুলাই) রাত আনুমানিক ১১টার দিকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ভজন গুহ ওই এলাকার মৃত সন্তোষ কুমার গুহের ছেলে এবং জামরুলতলা বাজারে কলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি প্রতিদিনের মতো ব্যবসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ছুরিকাঘাতের শিকার হন এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা রাতের অন্ধকারে রাস্তার পাশে রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে এবং আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালায়।
এ সময় হত্যাকাণ্ডের পাশের একটি বাড়ি থেকে রক্তমাখা ছুরি সহ মোহাম্মদ আবির (৩০) নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। তার হাতেও রক্তের দাগ লক্ষ্য করা যায়, যা উপস্থিত জনতা ও পুলিশ সদস্যদের নজরে আসে।
আটক আবিরের পরিচয় জানা গেছে—সে মৃত হান্নান বিশ্বাসের ছেলে। তাকে পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় উত্তেজিত অবস্থায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে দেখা গেছে এবং বিভিন্ন ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ছুড়ে দিতে শোনা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবির একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও সহিংস চরিত্রের অধিকারী। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক সহিংসতা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ।
একাধিক ঘটনায় তার নাম জড়িয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—নিজের কাকী রিমা বেগমকে নির্যাতন করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা, কমলা খাতুন নামের এক বৃদ্ধাকে মারধর করা, স্থানীয় ব্যবসায়ী খিরোদ কর্মকারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা এবং বুলবুলি মালিক নামের এক নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ।
স্থানীয় জনসাধারণ জানান, আবিরের লাগাতার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তারা বলেন, “এমন একজন সহিংস মানুষের বিরুদ্ধে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো ভজন গুহের প্রাণ রক্ষা করা যেত।”
এখন তারা দ্রুত বিচার এবং আবিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটে।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আইয়ুব আলী জানান, “আটক আবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিকভাবে তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। হত্যার পেছনের মোটিভ এবং তার সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক : আরিফুল ইসলাম আশিক
২০২৫ © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত