মহররম: উৎসব নয়, কারবালার শাহাদাত ও ঈমানি প্রতিরোধের মাস
—মোহাম্মদ উল্লাহ মাহমুদী
ইসলামের ইতিহাসে মহররম এক শোকগাথা, আত্মত্যাগ ও ঈমান রক্ষার মহান চেতনার নাম। কারবালার ময়দানে ইমাম হুসাইন (রাঃ) তাঁর পরিবার ও সঙ্গীদের নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের শাহাদাত ছিল মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অমর শিক্ষা—জুলুমের কাছে মাথা নত নয়, বরং রক্ত দিয়ে হলেও সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
আজ সেই মহররমকে ‘নববর্ষ উৎসব’ হিসেবে পালনের অপপ্রয়াস চলছে—যা এক গভীর ষড়যন্ত্র, খারেজি মনোভাবের ছায়ায় ঘেরা। খারেজিরা যেমন সত্য ও শাহাদাতকে বিকৃত করেছিল, তেমনি আজও কিছু তথাকথিত ‘সংস্কৃতির ধারক’ মহররমের মর্মবাণীকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায়।
মহররম কোনো আনন্দোৎসবের মাস নয়। এটি শোক, আত্মনিয়োগ, প্রতিবাদ ও ঈমানি জাগরণের সময়। অথচ এই মাসে আলোকসজ্জা, ঢাক-ঢোল, নতুন কাপড়, আনন্দ-অনুষ্ঠান—এসব কীভাবে যুক্ত হলো? এর পেছনে রয়েছে সেই অপচিন্তা—যা মুসলিম হৃদয় থেকে কারবালার জ্বলন্ত চেতনা মুছে ফেলতে চায়।
ইমাম হুসাইন (রাঃ) তাঁর শাহাদাত দিয়ে ঘোষণা করেছিলেন—জুলুম যতই শক্তিশালী হোক, সত্যের দীপ্তি কখনো নেভে না। মহররম আমাদের শেখায়—আসলে সত্যকে রক্ষা করতে চাইলে শুধু কথা নয়, জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকতে হবে।
তাই মহররম উদযাপন নয়, পালন করতে হবে ঈমানি প্রতিরোধ ও শহীদদের স্মরণে। উৎসব নয়, বরং কান্না, আত্মজিজ্ঞাসা ও সত্যের পথে দৃঢ় প্রত্যয়ের সময় এটি।