ভৈরব প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের জাফরনগর গ্রামে খেলার মাঠের দখল নিয়ে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে ভূইয়া বাড়ি বংশ ও সালাম মেম্বারের বাড়ি বংশের মধ্যে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাফরনগর গ্রামের ওই খেলার মাঠে দুই বংশের জমি রয়েছে। প্রতিদিন বিকালে স্থানীয় যুবকেরা সেখানে খেলাধুলা করেন। ঈদের দুদিন আগে মাঠে খেলতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। সেই উত্তেজনা থেকেই মঙ্গলবার বিকেলে সালাম মেম্বারের বাড়ির ইয়ামিন নামে এক যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে ভূইয়া বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ধাক্কা লাগে। এরপর তার মোটরসাইকেলের চাবি রেখে দিলে তুমুল বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে তা রূপ নেয় সংঘর্ষে।
প্রায় আধাঘণ্টা ধরে দুই পক্ষের মধ্যে দা, লাঠি, টেঁটা, বল্লম, ইট-পাটকেল নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন, যার মধ্যে এমাদ হোসেন (৬০) গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিল্লাল মিয়া, আরিফ মিয়া ও জিহাদ মিয়াকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন: মাসুদ মিয়া (৩০), শাকিল মিয়া (২৫), রুমান মিয়া (৩৩), জিহাদ মিয়া (২৫), শাহবুদ্দিন মিয়া (২৮), রুবেল হোসেন (৩০), আব্দুর রসিদ (৫৫), জীবন মিয়া (২০), মাসুম মিয়া (২৪), রিয়াদ মিয়া (১৮), হান্নান মিয়া (২০), হুমায়ুন কবির (২৬), শফিকুল ইসলাম (৩৫), অনন্ত মিয়া (১৬), শাহিন মিয়া (১৭) প্রমুখ।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক উম্মে হাবীবা জুঁই জানান, সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১৭ জন আহত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত ৩ জন ভর্তি এবং একজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
উভয় পক্ষের অভিযোগ:
ভূইয়া বাড়ির বংশের রিয়াদ মিয়া জানান, ‘আমরা মাঠে খেলতে গেলে সালাম মেম্বারের বাড়ির ছেলেরা বাধা দেয়। পরে পরিকল্পিতভাবে আমাদের এক যুবককে মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এরপর ঝগড়ায় রূপ নেয়।’
অন্যদিকে, সালাম মেম্বারের বাড়ির জিহাদ মিয়া বলেন, ‘আমাদের ইয়ামিনের মোটরসাইকেলের চাবি রেখে গালাগাল শুরু করে ভূইয়া বাড়ির যুবকেরা। এরপর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষ বাধে।’
শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন অর রসিদ কালিকাপ্রসাদ টিভিকে বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। আমি ঘটনাস্থলে না থাকলেও ফোনে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করি এবং পরে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যাই।’
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি বলেন, ‘সংঘর্ষের বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’