তানভীর ভুইয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক

“রক্ত দিয়ে হলেও বিজয়নগরকে অখণ্ড রাখব”—এ স্লোগানে আজ বুধবার (২০ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসে। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত সীমানা পরিবর্তনের খসড়ার বিরুদ্ধে সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়।

আসন পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব ঘিরে ক্ষোভ

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী উপজেলার বুধন্তি, চান্দুরা ও হরষপুর ইউনিয়নকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল–আশুগঞ্জ) আসনে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারা বলছেন, “ভৌগলিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক একতার বন্ধন ছিন্ন করে এমন সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।”

মহাসড়ক অবরোধ ও জনদুর্ভোগ

সকাল ১০টা থেকে চান্দুরা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থবির হয়ে পড়ে যান চলাচল। দীর্ঘ যানজটে পড়ে ঢাকা-সিলেট রুটের যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি

স্থানীয়রা একক কণ্ঠে বলেন, “আমরা ১০ ইউনিয়ন ভাই ভাই, একসাথে থাকতে চাই। প্রয়োজনে বিজয়নগরকে পূর্ণাঙ্গ একটি আসন ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় বিজয়নগরকে ভাঙতে দেওয়া হবে না।”
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দাবি না মানলে এবার শুধু মহাসড়ক নয়, রেলপথ অবরোধ, নির্বাচন কমিশন ঘেরাওসহ দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন হবে।”

রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ

বিক্ষোভে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন।

অনলাইনে তীব্র প্রতিক্রিয়া

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাজারো মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে একে “বিজয়নগর ভাঙার ষড়যন্ত্র” বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সামনে শুনানি

আগামী ২৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশনে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এ আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে। বিজয়নগরবাসী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যদি ভৌগলিক ঐক্য ভাঙা হয়, তবে আন্দোলন আরও বিস্তৃত ও কঠোর হবে।

আরও পড়ুন: ভৈরবের কালিকাপ্রসাদের মুক্তার— ডাকসুর ভিপি পদে আলোচনায়