জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩ জুলাই ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক প্রসূতির জীবন সংকটের মুহূর্তে ওষুধের উচ্চমূল্য ও ভোক্তা হয়রানির এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা এখন আলোচনার কেন্দ্রে। শহরের কুমারশীল মোড়ের ‘জান্নাত ফার্মেসি’ একটি মাত্র ইনজেকশন ৭ টাকা ৫০ পয়সার পরিবর্তে ৩৫০ টাকায় বিক্রির অভিযোগে অভিযুক্ত হয় এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর ৪০ হাজার টাকা জরিমানার সম্মুখীন হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ জুন রাতে। একজন ভুক্তভোগী কামরুল হাসান তার আত্মীয়ার জন্য মেথারস্প্যান ২০০ এমএল ইনজেকশন কিনতে জান্নাত ফার্মেসিতে যান। তিনি দাবি করেন, ইনজেকশনের গায়ে মূল্য স্পষ্টভাবে লেখা থাকা সত্ত্বেও দোকানদার ৩৫০ টাকা দাবি করেন এবং রশিদ দিতে অস্বীকৃতি জানান।
ক্ষুব্ধ কামরুল বিষয়টি রাতেই ফেসবুক লাইভে তুলে ধরেন। ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয় এবং মাত্র ১০ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় আড়াই লক্ষ বার দেখা হয়। এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
পরদিন, ২ জুলাই বিকেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয় থেকে সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী নেতৃত্বে জান্নাত ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হয়।
অভিযান শেষে তিনি জানান, “অতিরিক্ত দামে ওষুধ বিক্রির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। শুধু কামরুল হাসান নন, আরও একাধিক ভোক্তা একই ধরনের অভিযোগ করেছেন।”
এরপর প্রতিষ্ঠানটিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতের জন্য কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
এই অভিযানে সহায়তা করেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহীন, ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।
এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সাধারণ মানুষের সচেতনতা ও প্রতিবাদ কীভাবে প্রশাসনিক পদক্ষেপ আনতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা শুধু ভোক্তা অধিকার নয়, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং ন্যায্যতার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।