আজ, ১৫ আগস্ট ২০২৫, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ পালন করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের নিজ বাসভবনে একদল সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য। এই দিনটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়, যা জাতির জন্য এক গভীর শোকের মুহূর্ত।
১৫ আগস্টের ভোরে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সেনা সদস্যরা প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের ১৬ জন সদস্যকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তার স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল, তাদের স্ত্রীরা সুলতানা কামাল ও পারভীন জামাল রোজী, ছোট ছেলে শেখ রাসেল, ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভাতিজা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মনি, শ্যালক আব্দুর রব সেরনিয়াবাতসহ তার পরিবারের সদস্যরা, এবং বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ ও বিশেষ শাখার কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান। একমাত্র বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, যারা সে সময় জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন।
এই বছর, ২০২৫ সালে, বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী পালন হচ্ছে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের পতনের পর, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে বাতিল করে দেয়। ফলে, এই বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক শোক পালন করা হচ্ছে না। তবে, জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন তাদের নিজ উদ্যোগে দিনটি স্মরণ করছে।
জাতীয় শোক দিবসের প্রেক্ষিতে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা নাশকতা না ঘটে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান গোপালগঞ্জেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী, র্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও আওয়ামী লীগ কোনো কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেনি, তবে স্থানীয়ভাবে দিনটি পালন করা হচ্ছে।
যদিও রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক শোক পালন করা হচ্ছে না, তবুও জনগণ তাদের নিজ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ দিনটি পালন করছে। তারা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম শাহাদতবার্ষিকী একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা জাতির জন্য এক গভীর শোকের দিন। যদিও রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি পালন করা হচ্ছে না, তবুও জনগণ তাদের নিজ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করছে। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, জাতির পিতার আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের গুরুত্ব।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে র্যালি-অনুদান-সনদ: যুব দিবসের দিনটি ছিল উদ্বুদ্ধকর
সম্পাদক ও প্রকাশক : আরিফুল ইসলাম আশিক
২০২৫ © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত