জেলা প্রতিনিধি, পাবনা | ২৬ জুন ২০২৫
পাবনার বেড়া উপজেলায় বিয়ের জন্য পরিবারের চাপ সহ্য করতে না পেরে ক্ষোভে নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেছেন নাজমুল হোসেন (২২) নামের এক যুবক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে বেড়া উপজেলার কৈটোলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকনগর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নাজমুল ওই গ্রামের মিন্টু মোল্লার ছেলে এবং পেশায় একজন এস্কেভেটর চালক।
স্থানীয়রা জানান, পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে নাজমুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তার বড় বোন বিবাহিত হলেও ছোট দুই বোন এখনও অবিবাহিত। পরিবারের আশা ছিল, ছেলের বিয়ে দিলে মেয়েদের বিয়ের পথ সুগম হবে। কিন্তু নাজমুল বিয়েতে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। ঘটনার দিন দুপুরে পরিবারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সে বাজার থেকে একটি ব্লেড কিনে বাড়ির বাথরুমে ঢুকে নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলে।
তার চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা ছুটে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে অস্ত্রপচার শেষে বৃহস্পতিবার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নাজমুলের বাবা মিন্টু মোল্লা বলেন, “আমার ছেলে মানসিক রোগী। দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে অনেকটা ভালো ছিল। বিয়ের কথা বললেই সে বিরক্ত হতো। তবে এমন ঘটনা ঘটাবে, তা কল্পনাও করিনি।” তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না।
কৈটোলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, “অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশ কেস হওয়ায় ভর্তি প্রক্রিয়ায় কিছুটা জটিলতা তৈরি হলেও পরে চিকিৎসা শুরু হয়।”
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “নাজমুলের অস্ত্রোপচার ইতোমধ্যে ঢাকায় সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত এবং আমাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন।”
এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিষয়টি পারিবারিক চাপে মানসিক ভারসাম্যহীনতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন অনেকে। চিকিৎসা ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।