তপন দাস, নীলফামারী

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের নেকবক্ত বাজার সংলগ্ন স্বাধীন বাংলা নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে জমি দান করে দশ বছর পর মালিকানা দাবি করে আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেছেন আব্দুল আজিজ (৫০) নামের এক ব্যক্তি। এতে প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় চরম উত্তেজনা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

জানা গেছে, মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে আকবার আলী ২০১৭ সালের ২৩ মে বিদ্যালয়ের নামে ২০ শতক জমি দানপত্র করে দেন, যা নেকবক্ত মৌজার জে.এল নং ৭০, এস.এ খতিয়ান ১৭৮, দাগ ২৬৮৭ এ অন্তর্ভুক্ত। মোট জমি ৬৮ শতকের মধ্যে এই অংশটি দান করা হয়। দানের দীর্ঘ ১০ বছর পর আকবার আলীর ছোট ভাই আব্দুল আজিজ দানকৃত জমির মাঝ বরাবর ভাগ চেয়ে মালিকানা দাবি করেন। তিনি জেলা কোর্টে এমআর ৩৬৪/২৫ (জল) ধারায় ১৪৪/১৪৫ অনুযায়ী একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন।

মামলা গ্রহণ করে আদালত শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে জলঢাকা থানার এএসআই সিরাজুল ইসলামকে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং আদালত নোটিশ প্রেরণ করেন। এতে বিদ্যালয়ের চলমান বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হালিমুর রহমান জানান, কয়েক বছর চেষ্টার পর প্রতিষ্ঠানটির জন্য বাউন্ডারি নির্মাণের সরকারি বরাদ্দ আসে। নির্মাণ কাজ শুরু হলে দাতা সদস্য আকবার আলী কাজ বন্ধ করে দেন এবং অভিযোগ করেন যে, তাকে না জানিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।

পরে পরিকল্পিতভাবে তার ভাই আব্দুল আজিজ মালিকানা দাবি করে মামলা দায়ের করেন। এ প্রসঙ্গে আব্দুল আজিজ বলেন, “জমি তো ৬৮ শতক। আমার ভাই সামনের অংশ দিচ্ছেন, আমি পেছনের চাই না। আমি সামনের ভাগেই ভাগ চাই।”

তবে প্রধান শিক্ষক জানান, “প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই পরিকল্পিতভাবে দাতা সদস্য তার ভাইকে দিয়ে মামলা করিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সম্মান ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। এমনকি মামলায় ইব্রাহিম ও জয়নাল আবেদীন নামেও অভিযোগ আনা হয়েছে, যারা বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন।”

তিনি আরও বলেন, “জমি দানের সমস্ত দলিলপত্র বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত আছে। তদন্ত হলে সত্য উদঘাটিত হবে। বহু কষ্টে গড়ে ওঠা এই বিদ্যালয়ের যখন উন্নয়ন শুরু হয়েছে, তখন একটি কুচক্রী মহল পরিকল্পিতভাবে তা ব্যাহত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।”

অবশেষে প্রধান শিক্ষক হালিমুর রহমান বিদ্যালয়টির ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন।