মোঃ মাফিজুল ইসলাম, জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বেঞ্চ সহকারী পদে নিয়োগ নিয়ে উঠেছে জালিয়াতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির গুরুতর অভিযোগ। প্রথম স্থান অর্জন করেও নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন প্রার্থী আব্দুল ওয়ারেছ। তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও জড়িতদের বিচার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
২০২৩ সালের ১১ মার্চ আদালতের বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জয়পুরহাট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। প্রক্রিয়াগতভাবে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৫ জুন এবং মৌখিক পরীক্ষা ২২ জুন। এতে সব পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করেও বাদ পড়েন আব্দুল ওয়ারেছ। তার অভিযোগ, তৎকালীন একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক প্রার্থীকে বেঞ্চ সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয় রাজনৈতিক প্রভাবে।
শুধু আব্দুল ওয়ারেছ নন, আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী অভিযোগ করেন, জেলার বাইরের – বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার – প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়। কালাই উপজেলার দেলোয়ার হোসেন ও প্রান্ত হোসেন বলেন, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও তারা নিয়োগ পাননি। বরং সেই সময় ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা ও পুলিশের মাধ্যমে হুমকি-ধমকির মুখে পড়েন তারা।
২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর জয়পুরহাট জজ কোর্ট চত্বরে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করেন। সেখানে জানানো হয়, মোট ৪৪ জনের মধ্যে ২৮ জনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রার্থী ছিলেন। স্থানীয়দের বাদ দিয়ে এ ধরনের বিতর্কিত নিয়োগে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অংশগ্রহণকারীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ২ মার্চ এই দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। তারা দ্রুত অনিয়মিত নিয়োগ বাতিল করে প্রকৃত মেধাভিত্তিক প্রার্থীদের নিয়োগের দাবি জানান। একইসঙ্গে, পুরো প্রক্রিয়াটি তদন্ত করে দোষী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারা জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত অনেক কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : আরিফুল ইসলাম আশিক
২০২৫ © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত