গোপালগঞ্জে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস–২০২৫ উদ্যাপন আজ সকালে অঞ্চলজুড়ে হয়ে উঠেছিল উদ্দীপনাময় এবং উদ্দেশ্যনির্ভর এক প্রতিচ্ছবিতে। জেলার প্রশাসনিক অলঙ্কার জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একটি বিশাল র্যালির মাধ্যমে দিনটি শুরু হয়, যেখানে জেলার তরুণ সমাজ অংশগ্রহণ করে সক্রিয়ভাবে। জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান–এর নেতৃত্বে র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে আবার প্রারম্ভ স্থানে ফিরে আসে। এই আয়োজনের মাধ্যমে তরুণ সমাজের মধ্যে প্রযুক্তিমুখী অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাওয়া হয়েছিল।
র্যালির পর চলে আলোচনা সভা, যা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শাহিদুল ইসলাম, এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান নিজেই। বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। অন্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সি, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খান, সহকারী পরিচালক সাজেদুল হক এবং “প্রশিক্ষক প্রতিভা অধিকারী”–দের প্রতিনিধিরা। এই বৈঠকে আলোচনায় উঠে আসে যুবদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, উদ্যোক্তা হওয়া, এবং যুব শক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহার।
এছাড়াও, অনুষ্ঠানে ৫৫ জন যুবকে মোট ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার অনুদান এবং মোট ৮০ জনকে প্রশিক্ষণ সনদপত্র বিতরণ করা হয়। এই মূলধন ও শিক্ষাগত স্বীকৃতি কেবল অর্থ নয়, বরং উদ্যমী যুবসমাজের কাছে আত্মবিশ্বাস ও সুযোগের হাতও। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের এরকম উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, স্থানীয় প্রশাসন তরুণদের ক্ষমতায়নে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তাছাড়া, যুব দিবস উপলক্ষে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়। এই আয়োজন দেখিয়েছে যে, তরুণরা কেবল শিক্ষায় নয়, বরং স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও জেলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
গোপালগঞ্জের উদ্ভাসিত যুবশক্তিকে স্থিতিশীল ও ফলপ্রসূ করতে এই অনুষ্ঠানের বহু দিকই গ্রহণযোগ্য। র্যালির মাধ্যমে জনসচেতনতা, আলোচনা সভার মাধ্যমে প্রবুদ্ধ কণ্ঠ এবং অনুদান ও প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণের মাধ্যমে বাস্তব সাহায্যের পাশাপাশি সামাজিক দৃষ্টিতে দৃঢ় প্ররোচনা—সকলেই তরুণদের প্রতি প্রশাসনিক শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু
জেলা প্রশাসনের তরুণনীতির এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে গোপালগঞ্জের যুবরা কেবল নিজ জেলা নয়, জাতীয়ভাবে একটি নেতৃস্থানীয় আত্মপ্রকাশ ঘটাতে পারবে। প্রযুক্তিমুখী কর্মসংস্থানের উন্নয়ন, মননশীল উদ্যোক্তা তৈরি, এবং সামাজিক সচেতনতা—এসব মিলিয়ে আজকের আয়োজন ছিল এক ইতিবাচক প্রতীক।