জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | ১৬ জুলাই ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ৩ জুলাই সিলেট থেকে ঢাকাগামী একটি কাভার্ড ভ্যান আটক করে খাঁটিহাতা থানার পুলিশ। তারা ‘অবৈধ পণ্য পরিবহন’-এর অভিযোগে গাড়ির চালকের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নেয় বলে অভিযোগ উঠে। বিষয়টি তদন্তে উঠে আসে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বিপ্লু বড়ুয়া এবং চারজন কনস্টেবল—সাহাবুদ্দিন, মোস্তু মিয়া, সাকিবুল আহমেদ ও জহির মিয়া—ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) এই ছয়জনকে কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রত্যাহার করা হয়। পরদিন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ, হতাশা ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাই, কিন্তু এখন দেখছি তারাই আমাদের পকেট কাটছে।” শুধু এই একজনের নয়—এটি গোটা এলাকার মানুষের মনের কথা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঘুষ গ্রহণের ঘটনা নতুন নয়, তবে এবারকার মতো সরাসরি মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সামনে আসায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কীর্তিমান চাকমা জানান, “অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে, সাধারণ মানুষের প্রশ্ন—কেবল প্রত্যাহারই কি যথেষ্ট? এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের শূন্য সহনশীলতা নীতির বাস্তব প্রয়োগ কবে দেখা যাবে? জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কেবল তদন্তে সীমাবদ্ধ না থেকে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমেই হতে পারে সঠিক বার্তা।
এই ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনা কেবল খাঁটিহাতার জন্য নয়, বরং সমগ্র জাতির জন্য একটি সতর্কবার্তা—যেখানে আইনপ্রয়োগকারীরা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে, সেখানেই সমাজের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রশাসনের কাছে এখন সময় কঠোরতা প্রদর্শনের—যাতে ভবিষ্যতে আইনের প্রতি মানুষের আস্থা অটুট থাকে।