আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীন আয়োজিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন ২০২৫) চীনের চিংদাও শহরে অনুষ্ঠিত এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ভারত এমন অবস্থান নেয়—যা আলোচনায় বড় ধরনের চমক সৃষ্টি করেছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকলেও, ভারতের পক্ষ থেকে যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা হয়নি। কারণ হিসেবে জানানো হয়, ঘোষণাপত্রে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া হয়নি এবং সম্প্রতি কাশ্মীরের পালহালগামে পর্যটকদের ওপর চালানো হামলার প্রসঙ্গও উপেক্ষিত রাখা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জয়স্বাল এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম যৌথ বিবৃতিতে সীমান্তপারের সন্ত্রাস এবং সম্প্রতি সংঘটিত হামলার বিরুদ্ধে দৃঢ় ভাষায় অবস্থান নেওয়া হোক। কিন্তু তা হয়নি, ফলে আমরা এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করিনি।”
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পালহালগামে পর্যটকবাহী একটি বাসে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত দাবি করছে, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলার জন্য দায়ী। তাই এই ইস্যুকে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরার ব্যাপারে জোর দিচ্ছিল ভারত।
ভারতের এই অবস্থান এসসিও’র অভ্যন্তরে মতানৈক্যের ইঙ্গিত দিয়েছে। এ নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ‘নরম’ মনোভাব গ্রহণকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। রাজনাথ সিং বলেন, “সন্ত্রাসবাদ আর সীমানাপার সন্ত্রাসে কোনো দ্বিমত বা নীরবতা চলবে না। যারা সন্ত্রাসকে আশ্রয় দেয়, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।”
চীন ও পাকিস্তানের আপত্তির কারণে যৌথ ঘোষণাপত্রে সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে ভারতের চাওয়া ভাষা অন্তর্ভুক্ত হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দেশ যৌথ ঘোষণায় সই না করায় পুরো সম্মেলনের সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের এই কৌশলগত অবস্থান সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে তার আন্তর্জাতিক বার্তা জোরালো করেছে। তবে একইসঙ্গে এসসিও’র ভেতরে নানামুখী মতবিরোধ ভবিষ্যতে সংস্থাটির কার্যকারিতা ও ঐক্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
উল্লেখযোগ্য তথ্যসূত্র: