২০২৫ সালের আগস্ট মাসে আলাস্কায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকটি ছিল ভবিষ্যত গড়নে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। বৈঠক শেষে ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন—তার উদ্বেগ রক্তপাত বন্ধে নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তায় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনায় কেন্দ্রীভূত। এটি নিয়মিত তেলবাতি নয়, বরং বলেছিলো রাশিয়ার হারানো মর্যাদা পুনরুদ্ধার এবং পূর্ব ইউরোপে প্রভাব বিস্তারের বার্তা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় অভিযানের পেছনে মূল কারণ হিসেবে পুতিন উল্লেখ করেছেন—সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়ার অবক্ষয়, ন্যাটোর পূর্ব বাড়াবাড়ি এবং পশ্চিমাদের একতরফা আচরণ। তিনি যুক্তি দেখান, ইউক্রেন সংকটের আসল সুরাহা টানা যায় নিরাপত্তা-ভারসাম্য নিশ্চিত করে, যা যুদ্ধ ভাঙলে কোনো ফল হবে না।
এসময় তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁর কথায় দেখা যায়— ট্রাম্পও রুশ প্রেসিডেন্টের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের দিকেই সন্তুষ্ট, এবং এ কথা বিশ্বকে পরিষ্কার বোঝাতে ভোলেননি। তাঁর বক্তব্য ছিল, “আমরা নম্বর ওয়ান, তারা নম্বর টু”— যা রাশিয়ার গণমাধ্যমে রহস্যময় উৎসর্গ হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
নতুন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায়: রাশিয়া নিজেকে ভুক্তভোগী রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরছে, যা কেবল সামরিক বিভিনি নয়, রাজনৈতিক আসন দখল করাতেই ছড়িয়েছে। লিথুয়ানিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লরিনাস কাসচিউনাস এর পর্যালোচনায় বলেছেন, রাশিয়ার পুনর্মূল্যায়নবাদ উদ্বেগজনক; তারা ঠাণ্ডা-যুদ্ধের পরাজয় এখনও মেনে নিতে পারে না। পোল্যান্ড, চেক, রোমানিয়া এখন ন্যাটোর সদস্য—সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় মূল বাস্তবতা অন্যরকম।
পুতিনের গাড়িতে পরা মুখোশের অনুকরণে—রাশিয়াকে সম্মানিত শক্তির ক্লাবে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ট্রাম্পের মুখের থেকে প্রকাশিত বক্তব্যটিও যেন এই পুনঃঅভ্যর্থনার রসদ।
বিশ্লেষকরা দেখছেন, রাশিয়ার এই কূটনৈতিক চেহারাটি শুধু শৃঙ্খলা নয়, বরং একজন গেমচেঞ্জার হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে শপথ নেওয়ার ঘোষণা। ইউক্রেন আক্রমনের আগে ডিজাইন করা ওই ন্যাটো বিরোধী চুক্তি প্রস্তাব— এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে নীরব সমর্থনের ছকেই।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন: আমাদের ঈমানের আয়না